বি নজরুলের জীবনে প্রেম এসেছে স্বতঃস্ফূর্তভাবে। নারীর প্রেম তাঁর কাব্যে
ফেলেছে প্রভাব। হয়ে উঠেছেন একাধারে দ্রোহ ও প্রেমের কবি। তাঁর জীবনে এসব
প্রেমের ছোঁয়া বাংলা সাহিত্যকে দিয়েছে অনন্য মাত্রা। কবি তাঁর জীবনে আসা
প্রেমিকাদের নিয়ে লিখেছেন অজস্র গান, কবিতা। তাঁর জীবনের নানা ঘটনার জন্ম হয়েছে
তাঁর প্রেমিকাদের ঘিরে, এসব প্রেমে ছিল মোহমুগ্ধতা অনবদ্য সৌন্দর্য, বিরহ,
যাতনা। কবি নজরুলের দুঃখ-দারিদ্র্য তাঁর নিত্যসঙ্গী হলেও তাঁর হৃদয়ে বার বার
প্রেমের জোয়ার এসেছে।
নজরুল প্রথম মন দেয়া নেয়ার খেলা খেলেছিলেন তাঁরই গ্রামের এক ধনীর দুলালীর
সঙ্গে। সেটা ঘটেছিল তাঁর কিশোর বয়সে। এই মেয়েটিই ছিল প্রকৃত পক্ষে নজরুলের
প্রথম প্রেমিকা। তার বাড়ি ছিল খোট্টাডিহির কাছে নিমসা গ্রামে। মেয়েটি সত্যি
দেখতে শুনতে অত্যন্ত সুন্দরী ছিল। বাল্যকাল থেকেই এই কিশোরীর সঙ্গে নজরুলের মন
দেয়া নেয়া শুরু হয়। নজরুলের এই প্রথম প্রেমিকার নাম সফুরা খাতুন। রানীগঞ্জ
মহকুমার তথা রানীগঞ্জ থানার খোট্টা ডিহির সন্নিকটস্থ নিমসা গ্রামেই তার বিয়ে
হয়। নজরুল ব্যথার দান উৎসর্গ করেছিলেন তাঁর কৈশোরের সেই মানস প্রিয়ারই
উদ্দেশ্যে এই বলে- ‘মানসী আমার! মাথার কাঁটা দিয়েছিলুম বলে ক্ষমা করোনি, তাই
বুকের কাঁটা দিয়ে প্রায়শ্চিত্ত করলুম।' কবি তাঁর মানসীর মাথার কাঁটা বুকে
করে রেখেছিলেন তাঁর গোটা সৈনিক জীবন। কাঁটাটি তিনি হারিয়ে ফেলেন সৈনিক জীবন
শেষে কলকাতায় এসে। কবি সে কাঁটাটি দেখিয়েছিলেন তাঁর বন্ধু মুজফ্ফর আহমদকে।
প্রিয়ার একটি মাত্র কাঁটাকে সম্বল করে বুকভরা বেদনা নিয়ে কতকটা অভিমান বশেই
তিনি বাঙালী পল্টনে নাম লিখিয়ে যুদ্ধে চলে যান। কিছুকাল পরে কুমিল্লার দৌলতপুরে
আলী আকবর খানের ভাগ্নি সৈয়দা খাতুন ওরফে নার্গিসের প্রেমে মাতাল হন নজরুল। কবির
জীবনে ঘনিষ্ঠ প্রেমের পরশ এনে দিয়েছিলেন নার্গিস।
নার্গিসের সঙ্গে কবির প্রথম পরিচয় হয় ১৯২১ সালের মার্চ অথবা এপ্রিল মাসে। কবি
নিমন্ত্রণে গিয়েছিলেন কুমিল্লার দৌলতপুরে আলী আকবর খাঁয়ের সঙ্গে। সেখানেই কবির
মনের লেনদেন শুরু হয়। নার্গিসের সঙ্গে কবির আলোচনার সূত্রপাত ঘটেছিল কবির বাঁশি
বাজানো নিয়ে। এক রাতে কবি খাঁ-বাড়ির দীঘির ঘাটে বসে বাঁশি বাজাচ্ছিলেন। সেই
বাঁশির সুরে মুগ্ধ হন নার্গিস। কবি তাঁর প্রেমে পড়েন প্রথম দেখাতেই। সৈয়দা
খাতুনও কবির প্রেমে সাড়া দিয়েছিলেন।
নার্গিসের মায়ের নাম আসমাতুন্নেসা, স্বামী হারা আসমাতুন্নেসা মেয়েকে নিয়ে ভাই
আলী আকবর খানের বাড়িতেই থাকতেন। সৈয়দা খাতুনকে ভালবেসে কবি তাঁর নাম রেখেছিলেন
নার্গিস। কুমিল্লার দৌলতপুরে থাকা অবস্থাতেই কবি সিদ্ধান্ত নিলেন নার্গিসকে
তিনি বিয়ে করবেন। ১৯২১ সালের ১৭ জুন নার্গিসের সঙ্গে নজরুলের বিয়ের তারিখ ধার্য
হয়। নজরুল বিয়ের রাতে মতান্তরে পরেরদিন সকালে কুমিল্লার বীরেন সেনকে (বিরজা
সুন্দরীর ছেলে) সঙ্গে নিয়ে কুমিল্লার সেনগুপ্ত পরিবারে চলে আসেন। কবির জীবন
নানা বিষাদে ছেয়েছিল।
তাঁদের বিয়ে (বিয়েতে মতানৈক্য আছে) হলেও বাসর হয়নি। এরপর নার্গিসের সঙ্গে তাঁর
ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। পরবর্তীতে নার্গিসকে ভালবেসে নজরুল লিখেছিলেন ১৫৭টি গান ও
১২০টি কবিতা। নার্গিসকে নিয়ে নজরুলের লেখা বিখ্যাত গানটি হলো-
‘পথ চলিতে যদি চকিতে, কভু দেখা হয় পরান প্রিয়’।
১৯২৪ সালে পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর কলেজ কবি নজরুলকে সংবর্ধনা প্রদান করে। কবি
সংবর্ধনা সভায় স্বরচিত গান ও কবিতা আবৃত্তি করেন। কবির গানে আপ্লুত কমলা নামের
স্থানীয় স্কুলের এক শিক্ষকের কন্যা তাঁর গলার সোনার হারটি কবিকে উপহার দেন।
হিন্দু ধর্মীয় সামাজিক গোঁড়ামির কারণে ধিক্কৃত হন সেই তরুণী। এর পরিণতি
নজরুলের জন্য মেয়েটি আত্মহত্যা করেন। এই নিরপরাধ মেয়েটির করুণ মৃত্যুতে মর্মাহত
হন কবি নজরুল। সেই গভীর দুঃখের দাহও তাঁকে দগ্ধ করেছে বহুকাল।পরে অবশ্য আশালতার
প্রেমে পড়েন নজরুল। কিছুদিন প্রেম পর্ব চলার পর ১৯২৪ সালের ২৫ এপ্রিল শুক্রবার
নজরুল আশলতা সেন ওরফে তাঁরর (ডাকনাম দুলি) সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
নজরুলের শাশুড়ির নাম ছিল গিরিবালা দেবী। তিনি ছিলেন বিধবা ও বাহ্মণের মেয়ে।
নজরুল-তাঁরর বিয়েতে তাঁর শ্বশুরকুলের ঘোরতর আপত্তি ছিল। কিন্তু গিরিবালা দেবী
বলেছিলেন আমার তাঁর (দুলি) নজরুলকে ভালবেসেছে। আমি আমার মেয়ের সুখের জন্য
সেখানেই দুলির বিয়ে দেব। মুসলিম রীতি অনুসারে নজরুলের সঙ্গে তাঁরর বিয়ে পড়ানো
হয়। ‘মা ও মেয়ে’ উপন্যাসের লেখিকা মিসেস এম রহমান সাহেবার উদ্যোগে কলকাতার ৬নং
হাজী লেনে এই বিবাহ কার্য সুসম্পন্ন হয়। বিয়ের পর আশলতা সেনগুপ্তার নতুন নামকরণ
করা হয় প্রমীলা নজরুল ইসলাম।
অতঃপর নব দম্পতিকে মিসেস এম রহমান হুগলিতে নিয়ে যান সেখানে ভুপতি মজুমদারের
সহায়তায় হামিদুন নবী মোখতার সাহেবের একটি বাড়িভাড়া করে তাদের থাকার ব্যবস্থা
করা হয়। কবি গভীরভাবে ভালবেসেছিলেন তাঁর প্রেয়সী প্রমীলাকে। তাঁদের দাম্পত্য
জীবন ছিল সুখের। বিয়েতে তখন তাঁর বয়স ছিল ১৪ আর নজরুলের ২৩। কবির জীবনে আসেন
আরেক নারী ফজিলাতুন্নেসা। তিনি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিতের প্রথম
স্নাাতকোত্তর মুসলমান ছাত্রী। কবি কাজী নজরুল ইসলাম ফজিলাতুন্নেসাকে মন থেকেই
ভালবেসে গেছেন। কিন্তু এ প্রেমে গতিময় ছিল না। কারণ ফজিলাতুন্নেসা নজরুলের
প্রেমের আহ্বানে সাড়া দেননি। অন্য ধাতুতে গড়া এই নারী তাৎক্ষণিক প্রত্যাখ্যান
করেছিলেন তাঁকে। প্রত্যাখ্যানের ভাষা ও আচরণ ছিল রীতিমতো কঠোর। ফজিলাতুন্নেসাকে
কবি না পেয়ে লিখতে থাকেন একের পর এক চিঠি।
নিজ হাতে না দিলেও বন্ধুবর অধ্যাপক মোতাহার হোসেনকে দিয়ে পাঠাতেন প্রেমময়,
যাতনায় বুক ভারি হওয়া নজরুলে প্রেম বাণী। ফজিলাতুন্নেসার প্রেম প্রত্যাখ্যান
মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করেছিল কবিকে। ফজিলাতুন্নেসার সঙ্গে কবির পরিচয় ১৯২৮
সালে। কাজী মোতাহার হোসেন কবিকে নিয়ে গিয়েছিলেন ফজিলাতুন্নেসার বাসায়। উদ্দেশ্য
ছিল হাত গণনা। সেই নিরীহ উদ্দেশ্য নিয়ে কাছে এসে কবির চোখে প্রেম সুধা তুলে
দিলেন ফজিলাতুন্নেসা। নজরুল তাঁকে বেশ কয়েকটি প্রেমপত্র পাঠিয়েছিলেন কিন্তু
ফজিলাতুন্নেসা তাঁর প্রেমে সাড়া দেয়নি। নজরুল বলেছিলেন ‘সঞ্চিতা’ আপনার নামে
উৎসর্গ করে ধন্য হতে চাই। আমরা জানি ‘সঞ্চিতা’ শেষাবধি রবীন্দ্রনাথের নামে
উৎসর্গকৃত করা হয়েছিল।
১৯২৮ সালে ফজিলাতুন্নেসার বিলাত গমন উপলক্ষে কলকাতার সওগাত অফিসে এক সংবর্ধনা
অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে ফজিলাতুন্নেসাকে উৎসর্গ করে নজরুল একটি
স্বরচিত গান পরিবেশন করেন।
জাগিলে ‘পারুল’ কি গো ‘সাত ভাই চম্পা’ ডাকে।উদিলে চন্দ্র-লেখা বাদলের মেঘের ফাঁকে॥চলিলে সাগর ঘুরেঅলকার মায়ার পুরে,ফোটে ফুল নিত্য যথায়জীবনের ফুল্ল-শাখে॥
লন্ডনে পিএইচডি করাকালীন সময়ে ফজিলাতুন্নেসার সঙ্গে খান বাহাদুর আহসান উল্লাহর
পুত্র শামসুজ্জোহার সঙ্গে পরিচয় ঘটে এবং প্রিন্সিপাল ইব্রাহিম খাঁর
তত্ত্বাবধানে ফজিলাতুন্নেসা ও শামসুজ্জোহার বিয়ে হয়।
বিয়ের খবর শুনে নজরুল লিখেছিলেন- ‘বাদল বায়ে মোর নিভিয়া গেছে বাতি। তোমার ঘরে
আজ উৎসবের রাতি’। ফজিলাতুন্নেসার প্রতি কবির ভালবাসা বছর দুয়েকের মতো ছিল।
ফজিলাতুন্নেসার কাছ থেকে প্রেমে কোন ধরনের সাড়া না পেয়ে নজরুল একাই নীরবে
ভালবেসে গেছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের প্রধান নলিনীমোহন বোসের প্রিয় ছাত্রী ছিলেন
ফজিলাতুন্নেসা। তিনি অধ্যবসায়ী এই ছাত্রীকে নানাভাবে বুদ্ধি-পরামর্শ দিয়ে
সাহায্য করতেন যাতে বয়স সুলভ চঞ্চলতা তাঁকে ‘বিপথে’ নিতে না পারে।
ফজিলাতুন্নেসাও ড. বোসকে ‘দেবতার’ আসনে বসিয়েছিলেন। আলাপ-পরিচয়ের প্রথম পর্বেই
এই শিক্ষকের প্রতি তাঁর অকুণ্ঠ শ্রদ্ধার কথা হয়তো নজরুলকে জানিয়েছিলেন
ফজিলাতুন্নেসা। এ ব্যাপারটি একেবারেই সহ্য করতে পারেননি নজরুল। তাঁর
প্রেমাকাঙ্খা ও মিলনের ক্ষেত্রে এই লোকটিকেই বড় একটি বাধা বলে মনে হয়েছে
নজরুলের।
নজরুলের প্রেম জীবনে রানু সোমের কথাও উঠে এসেছে। সঙ্গীতজ্ঞ দীলিপ কুমার রায়
রানুকে নজরুলের গান শেখাতেন। সেই পরিচয়ের সূত্র ধরে নজরুল নিজেই ঠিকানা খুঁজে
ঢাকায় রানুদের বাড়িতে এসেছিলেন। ঢাকার বর্ধমান হাউজে প্রতিভা বসু ওরফে সোমকে
গান শেখাতেন নজরুল। একপর্যায়ে দুজনের সম্পর্ক প্রণয়ে গড়ায়।
সে সময় প্রতিভা বসুর (রানু সোম) প্রেমে পড়েছিলেন নজরুল। সেটি জানাজানি হয়ে
গেলে ঢাকার স্থানীয় মাস্তান শ্রেণীর কিছু ছোকরা বিষয়টি ভাল চোখে দেখেনি। একদিন
মাস্তান ছোকরার দল বর্ধমান হাউজ থেকে রাত্রিতে ফেরার পথে নজরুলকে শারীরিকভাবে
লাঞ্ছিত করে। অবশ্য নজরুল ও তাদের কাছ থেকে হাতের লাঠি কেড়ে নিয়ে গুন্ডাদের
পিটিয়েছিলেন।
শিল্পী কানন দেবীকেও নজরুল গান শিখিয়েছিলেন। আর তাঁকে ঘিরেও মুখরোচক ঘটনা
ছড়িয়ে ছিল কলকাতায়। নিন্দুকরা এই সুযোগটিই নিয়েছিলেন। তাই অভিনেত্রী কানন বালা
আর কবিকে নিয়ে কম কানাঘুষো ছিল না। একবার কবি পনেরো-ষোলো দিন লাপাত্তা। শাশুড়ি
গিরিবালা দেবী অনেক খোঁজা-খুঁজির পর কবিকে পেলেন অভিনেত্রী কানন দেবীর বাড়িতে।
কাননকে গান শেখাচ্ছেন কবি।
‘পাজি কোথাকার! তোমার জন্য আমরা জাত ছেড়েছি, ধর্ম ছেড়েছি। আমার মেয়ে মাথায়
কলঙ্ক নিয়ে একদিন তোমার ঘর করতে এসেছিল আজ তাকে ভুলে তুমি এক সিনেমার
অভিনেত্রীর ঘরে বসে আছো? শীঘ্রই গাড়িতে গিয়ে ওঠো’। সেই যে কবি কানন বালার ঘর
ছেড়েছিলেন আর কখনও সেখানে যাননি।
উমা মৈত্র ঢাকায় গান শিখেছিলেন নজরুলের কাছে। গান শেখাতে গিয়ে নজরুল নোটনের
প্রতি দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন বলে অনেকের ধারণা। কেননা কবির বিরহী প্রেমে
নার্গিস-ফজিলাতুন্নেসার পাশাপাশি উমা মৈত্র ওরফে নোটনের কথাও উঠে এসেছে।
তৎকালীন ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ সুরেন্দ্রনাথ মৈত্রের মেয়ে নোটন। উমা মৈত্রের
ডাকনাম নোটন। অধ্যক্ষ সুরেন্দ্রনাথ মৈত্রের মেয়ে নোটন বাস করতেন ঢাকার
যাত্রাবাড়ীতে। উমা মৈত্র ওরফে নোটন দেখতে খুব সুন্দরী ছিলেন, শিক্ষিতও। তাঁদের
বাবা-মায়ের ধারণা ছিল তাদের মেয়েকে বিয়ে করার মতো পাত্র জন্মায়নি। ফলে তাঁকে
একাই থাকতে হতো। উমা মৈত্রকে গান শেখাতে গিয়ে নজরুল তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ
হয়েছিলেন।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত উমা মৈত্র ওরফে নোটন নজরুলের প্রেমে সাড়া না দিয়ে আরও
অনেকের সঙ্গে প্রেমে জড়িয়ে পড়েন। খুব সুন্দরী ছিলেন বলে একজন মুসলিম ছেলের
সঙ্গে ও তাঁর প্রেম হয়েছিল। ছেলেটি ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস (আই.সি.এস) ছিলেন।
তারা দুজনে বেড়াতে এক সঙ্গে দার্জিলিংও গিয়েছিলেন। কিন্তু তার বাবা-মা সেই
ছেলের সঙ্গে বিয়ে দেন নাই। নোটন পরে আত্মহত্যা করেছিলেন। উমা মৈত্র ওরফে
নোটনের কথা কবি নজরুল তার ‘শিউলিমালা’ গল্পটিতে বর্ণনা করেছেন। শিউলি মূলত উমা
মৈত্রের কাল্পনিক চরিত্র। জনৈক জাহানারা বেগম চৌধুরীকেও নজরুল ইসলাম
ভালোবাসতেন। জাহানার চৌধুরী সম্পাদিত সে আমলের কাগজের নাম ‘বর্ষ বানী’ ও ‘রূপ
রেখা’।
নজরুলের সঙ্গে জাহানারা চৌধুরীর দার্জিলিং-এ মন দেয়া নেয়া হয়েছিল বলে অনেক
গবেষকই মনে করেন। জাহানারা চৌধুরী নজরুলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে মিশেছিলেন। তিনি
কবি নজরুলকে মনেপ্রাণে ভালবাসতেন কিন্তু পারিবারিক বাধার কারণে তাঁদের ভালবাসা
স্থায়ী হয় নাই। নজরুল এসব হৃদয় ঘটিত ব্যাপারে আনন্দের চেয়ে দুঃখই পেয়েছেন
বেশি।
প্রেমের বিরহের বিদ্রোহের সাম্যবাদের কবি একজনই তিনি নজরুল। তাঁর শিল্প
সাহিত্য যেমন প্রেম রয়েছে তেমনি রয়েছে বিরহের যাতনা। প্রেম নাকি কবি মানসের
প্রধান প্রেরণা। প্রেমিক কবি নজরুলের মনতো প্রেমময় হবেই। আর তাই প্রেম নজরুলের
জীবনে এসেছিল বারবার। কখনও ঝড়ের মতো কখনও নিভৃতে, নীরবে।
0 মন্তব্যসমূহ