এই লেখাটি জুন ২০২১ সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছে।
বর্তমান সময়ে ডিপ্রেশান বিষয়টা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের
অতঃপর ভাবে জড়িত। আজ সেই ডিপ্রেশনের সৃষ্টির কারন ও সমাধান সম্পর্কে একটা
ছোটো রচনা আপনাদের কাছে উপস্থাপন করার চেষ্টা করলাম। প্রথমেই যদি আমার ডিপ্রেশানের
খুব কাছাকাছি বাংলা প্রতিশব্দ খুঁজতে চাই তাহলে সবার আগে আসবে ‘অবসাদ’ শব্দটি আর এই
শব্দটির সাথে দুঃখ এবং বিষাদ লেগে থাকে। ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা’-র নিয়মাবলী
অনুযায়ী অবসন্ন মন, শক্তিহীনতা এবং
উৎসাহহীনতাকেই ডিপ্রেশানের মূল কারণ হিসাবে গণ্য করা হয়েছে। বিখ্যাত মনঃ বিঞ্জানী
অ্যারন বেকের তত্ত্ব অনুযায়ী নিজের
পরিবেশের এবং ভবিষ্যত সম্পর্কে নেতিবাচক ধারনা থেকেই ডিপ্রেশানের সৃষ্টি হয়।
চিকিৎসাগত দিক থেকে ডিপ্রেশনকে ২টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথা -১.ইউনিপোলার
ডিপ্রেশন এবং ২. বাইপোলার ডিপ্রেশান।
আর এই ডিপ্রেশান হলো এমন একটি রোগ যাকে বাহ্যিক দিক থেকে
মনে হবে রুগীর কোন রোগ নেই কারণ এই রোগের কোনো বাহ্যিক কোন উপসর্গ থাকে না। তবে তার ভিতরে একটা সমস্যা
হচ্ছে যেটি বহিঃপ্রকাশ করতে পারাটা খুবই কঠিন। ডিপ্রেশনে আক্রান্তরা সব কিছু বুঝতে
পারার ক্ষমতা থাকার পরও সেই কাজে মনোনিবেশ করতে পারে না। তার মধ্যে এতটাই
মনক্লান্তি লাগঝে যে সে স্বাভাবিক অবস্থার মধ্য দিয়ে যেতে পারছে না। আর এই বিষন্ন
ব্যক্তির অনেক সময় মনে হয় জীবিত থেকে আর
লাভ নেই, বেঁচে থাকার চেয়ে মরে যাওয়া শ্রেয়। তাই অনেক সময়
আত্মহত্যার মতো প্রবনতাও চলে আসে। জাতীয় ক্রাইম ব্যুরো রেকর্ডের পরিসংখ্যানে বলা
হয় ২০১৮ সালে ভারতে প্রতি ঘণ্টায় নুন্যতম এক জন করে আত্মহত্যার পথে পা বাড়ায়।
এর সিংহ ভাগ কারন হল মানসিক অবসাদ। ভাবতে অবাক লাগলেও ২০২০ সালে ভারতে মোট
আত্মহত্যার সংখ্যা ছিলো ১ লক্ষ্য ৩৪ হাজার ৫১৬ জন । এদের মধ্যে ৭৫ শতাংশ আত্মহত্যা
করেন ১৮ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে। এর মধ্যে অন্যতম কারন হলো এই ডিপ্রেশান।
ডিপ্রেশন কেন সৃষ্টি হয়:-
অনেকেই ডিপ্রেশান সৃষ্টির কারণ হিসাবে প্রেম সংক্রান্ত
বিষয়কে দায়ী করেন তবে এটি সঠিক নয়। কোন কাজের নেগেটিভ বিষয় নিয়ে আলোচনা করলে
ডিপ্রেশন সৃষ্টি হয়। অনেকে কেরিয়ার নিয়ে,অনেকে ভালো পড়াশোনা করেও ভালো ফল না পেয়ে,
হওয়া কাজ না হলে, এবং বেকারত্ব, নিঃসঙ্গতার মতন একাধিক কারন ডিপ্রেশন সৃষ্টির জন্য দায়ী।
সমাধান:-
আপনি মানসিক
ভাবে বিপর্যস্থ মনে হলে প্রিয়জন দের সাথে
কথা বলুন, গান শুনুন, নিজেকে সময় দান করুন, নিজের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিন।
সব শেষে বলি, ব্যর্থ হয়েছেন বলে ডিপ্রেশনের কবলে না পড়ে, আত্মহত্যার পথে পা না বাড়িয়ে নিজের ব্যর্থতার কারন অনুসন্ধান করুন এবং সফল হওয়ার পথ অনুসন্ধান করুন, আত্মহত্যা হল ভিরুতার পরিচয় আর সংগ্রামের মধ্যদিয়ে বেঁচে থাকা হল সাহসিকতার পরিচয়, আপনিই নির্বাচন করুন কোন পথে অগ্রসর হলে আপনি সফলতার আনান্দ ময় জয়রথে উঠতে পারবেন।
0 মন্তব্যসমূহ