ad

মাসিক ই-পত্রিকা ‘উৎস’ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে(বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন)।
অনুগ্রহ করে পত্রিকার ইমেলে আর লেখা/ছবি পাঠাবেন না।

সুরারাই পত্তরু, এক চোখ ধাঁধানো জীবনভ্রমর- রাজদীপ বিশ্বাস



এই লেখাটি জুন ২০২১ সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছে। 

পটভূমি: সুরারাই পত্তরু বর্তমানে ভারতীয় চলচ্চিত্রজগতের এক অন্যতম তামিল মাইলফলক এতি প্রধানত একটি জীবনী সংক্রান্ত, অনুপ্রেরণামূলক সিনেমা যেখানে  একজন তামিল ব্যাক্তির (জি. আর. গোপীনাথ) সাধারণ থেকে অসাধারণ হয়ে ওঠার কাহিনী সুচারুভাবে তুলে ধরা হয়েছে।

    গল্পের প্রধান চরিত্র, নেদুমারান ওরফে মারা, একজন মধ্যবিত্ত তামিল ঘরের ছেলে, যে ভারতীয় বায়ু সেনার প্রাক্তন ক্যাপ্টেন তাঁর জীবনে একটাই স্বপ্ন- সাধারণ মানুষকে স্বল্প খরচে বিমান যাত্রা করতে একটি এয়ারলাইন সংস্থা তৈরি করা। এই প্লটকে নিয়েই পুরো কাহিনীটি নির্মান করা হয়েছেএছাড়া গল্পের অন্যান্য বিষয়গুলির মধ্যে রয়েছে মারার প্রেমকাহিনী, তাঁর পারিবারিক ঝামেলা প্রভৃতি, যেগুলোর নাটকীয় রূপান্তর গল্পটিকে আরও সুন্দর এবং বাস্তবিক করে তোলে। এর পরেই মারা তাঁর স্বপ্ন পূরনের পথে কী কী বাঁধার সম্মুখীন হয়, কত রকমের পরিশ্রম ও সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে যেতে হয় এবং চলচিত্রের শেষে এসে সে কি তার স্বপ্ন পূরণ, সফলতা অর্জন করতে পারে নাকি পারে না - এই সব দেখে দর্শকদের একটা আলাদা রকমের অভিজ্ঞতা তৈরি হবে এমনকি দর্শকরা খুব অনুপ্রাণিতও হবে।

অভাবনীয় শিল্পকর্ম: চলচিত্রের প্রধান উপাদান হলো এটির অভাবনীয় কাহিনী এবং সেটির নাটকীয় রূপান্তর, যা দর্শকদেরকে গল্পের সাথে বেঁধে রাখে; কাহিনী যত এগোতে থাকে, দর্শকদেরও ততই আগ্রহ বৃদ্ধি পেতে থাকবেঅন্যদিকে কাহিনীর এক এক ঘটনাস্তরে কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখে মনে হয় সমাজের কঠোর বাস্তবিক চিত্র তুলে ধরা হয়েছে, যেটি সত্যিই কাহিনীকে আরও দুর্দান্ত করে তোলে। এছাড়াও, কিছু কিছু দৃশ্য খুব শিহরিত করে তোলে, এমনকি চলচিত্রের শেষাংশে দর্শকরা খুব আবেগপ্রবণ হয়ে উঠবে। এইসব ক্ষেত্রে পরিচালক এবং চিত্রনাট্য লেখক সুধা কঙ্গারা এবং অন্যান্য লেখক, শালিনী উশাদেবী ও বিজয় কুমার প্রমুখরা তাদের অনন্য প্রতিভার পরিচয় দিয়েছেন।

   অন্যদিকে, অভিনয়ে সুরিয়া, পরেশ রাওয়াল, অপর্ণা বালামুরালি- প্রধানত এই তিনজন তাদের অভিনয় দক্ষতার মাধ্যমে মন মুগ্ধ করে দিয়েছেন; এছাড়া অন্যান্য অভিনেতা-অভিনেত্রীরা তাদের নিজ নিজ চরিত্রে যথেষ্ট ভালো কাজ করেছেন এবং তাদেরকে কাহিনীর অন্যতম সহায়ক ভূমিকায় দেখা গিয়েছে।

সেহেতু এটি নিঃসন্দেহে অন্যতম একটি সেরা শিল্পকর্ম।

 

ভালো-খারাপ: চলচিত্রটি নিঃসন্দেহে একটি অসাধারণ চলচিত্র। চিত্রনাট্য থেকে শুরু করে অভিনয়, সমস্ত কিছুই দারুণভাবে প্রশংসনীয়। সিনেমাটির কোনো জায়গাতেই সেরকম বিরক্তিকর কিছু নেই। সিনেমাটির মধ্যংশে কিছু মুহূর্ত বাদে সম্পূর্ণটাই দর্শকদের মনে হবে যেনো তারা একটা অসাধারণ, অনুপ্রেরণামূলক জীবনভ্রমণের চাক্ষুষ নিদর্শন পেয়েছেন।

 

কৃতিত্ব: ৭৮তম গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ডস-এ বেস্ট ফরেন ফিল্ম শ্রেণীতে ভারতের অন্যতম দশটি চলচ্চিত্রের মধ্যে এই সিনেমাটি জায়গা করে নিয়েছিল; অন্যদিকে এটি ৯৩তম অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডস-এ বিভিন্ন শ্রেণীতে নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছে এছাড়াও অন্যান্য ফিল্ম ফেস্টিভ্যালগুলোতে প্রশংসিত হয়েছে

 

সিদ্ধান্ত: এটি একটি বাস্তব জীবনভিত্তিক সিনেমা যেখানে সিনেমাটি যাতে সাধারণ মানুষের উপভোগ করার মতো হয়, তার জন্য বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে প্রমদমূলক উপাদানও রয়েছে যা আরও মন মুগ্ধ করে দেয়। সেহেতু এই ধরনের জীবনদর্শনমূলক চলচ্চিত্রঅবশ্যই দেখা উচিত।

 

আমার কাছে সিনেমাটির রেটিং - ৪.৭ / ৫

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ