ad

মাসিক ই-পত্রিকা ‘উৎস’ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে(বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন)।
অনুগ্রহ করে পত্রিকার ইমেলে আর লেখা/ছবি পাঠাবেন না।

ইয়ে দুনিয়া মেরে বাবুল কা ঘর, ও দুনিয়া সাসুরাল – এক সুফি পীরের কথা -ভাগ্যশ্রী সেনগুপ্ত



ছে
লেবেলায় আমরা সকলেই আমাদের ঠাকুমা দিদিমাদের কাছ থেকে বেশ কিছু প্রবাদ শুনে বড় হয়েছি যার ব্যবহার হয়ত আজ নিজেরা নিজেদের অজান্তে কম বেশি দৈনন্দিন জীবনে করেও থাকি। সেরকমই একটা প্রবাদ আমার ঠাকুরদা প্রায়শই তাঁর কথায় ব্যবহার করতেন ‘দিল্লী অনেক দূর’ বা দিল্লী দুরস্ত, যদিও তার তাৎক্ষনিক তাৎপর্য হয়ত সেই মুহূর্তে কোন ঘটনার বিলম্ব বোঝাতে নির্দেশ করত কিন্তু এই নিবন্ধে প্রবাদটির প্রেক্ষিত উল্লেখের কারন কিছুটা আলাদা। এই ধরুন যদি বলি আজ থেকে প্রায় ৮০০ বছর আগে কোন সুফি পীর,তৎকালীন দিল্লী সুলতানের সঙ্গে তাঁর বাকবিতণ্ডায় প্রথম এই প্রবাদটির ব্যবহার করেছিলেন শুনতে রোমাঞ্চ লাগে তাই না? আবার ধরুন যদি বলি আবিদা পারভিন মহাশয়ার গাওয়া “ছাপ তিলক সাব ছিনি রে মোসে নাইনা মিলাইকে” এই গজলটির বয়স প্রায় আগের ঘটনাটির সমসাময়িক যা আজকের কোক স্টুডিও মিউজিকের দৌলতে প্রায় সকলেরই পরিচিত তাহলেও ভাবতে অবাক লাগে তাই তো? এবার কথা হল হঠাৎ প্রবাদ থেকে আবিদা পারভিন এর প্রসঙ্গ কেন?  আসলে দুটি ঘটনার নেপথ্যে যে সুফি পীরের অবদান রয়েছে আমার এই নিবন্ধ তাঁকে নিয়ে।
 
ভারতবর্ষীয় উপমহাদেশে সুফিবাদের অনুপ্রবেশ প্রায় দ্বাদশ ত্রয়োদশ শতাব্দীতে। সহজ কথায় আধ্যাত্মবাদের আরেক নাম সুফিবাদ। ধর্মীয় গোঁড়ামি, কুসংস্কার, অন্ধ আনুগত্যের পরিবর্তে সত্যের অন্বেষণ, প্রেম, ঈশ্বরের প্রতি শ্রদ্ধা, অনুতাপ-ই সুফি দর্শনের মূলমন্ত্র। যার প্রধান চাবিকাঠি হল জুহুদ (দয়া), তাওয়াকুল (সন্তোষ), কামাত (বিচ্ছিন্নতা), উজলাত (নিঃসঙ্গতা), সাবর (ধৈর্য), জিকির (ঈশ্বরকে স্মরণ), রাজা (ঐশ্বরিক ইচ্ছার ওপর অনুগত্য), মুরাকাবা (ধ্যান)। 
কিন্তু এই সুফি কারা? আরবীতে সুফ কথার অর্থ উল বা মোটা বস্ত্র, এই বস্ত্র পরিধানকারীরাই সুফি, তবে বিশুদ্ধতা অর্থেও সুফ কথাটি ব্যবহৃত হয়। সুফিরা মূলত সেই সকল ব্যক্তি যারা তাদের অনুশীলনের মাধ্যমে ঈশ্বরের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করেন, তাই সুফিবাদের মৌলিক বিষয় হল ঈশ্বর ও মানুষের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক। 

এখানে বলা প্রয়োজন যে ভারতীয় উপমহাদেশে এরূপ একাধিক ঘরানার সুফি-পীরদের আগমন ঘটে যাদের মধ্যে চিশতী, সুরাওয়ারদি, নাকশবন্দি, কাদরি সিলসিলাগুলি বিশেষ উল্লেখযোগ্য। এই সিলসিলা বা ঘরানাগুলি একে অন্যের থেকে পৃথক ও অনন্য হলেও জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতার দিক থেকে খাজা মইনুদ্দিন চিশতী সংগঠিত চিশতী সিলসিলা ছিল অনেকটাই অগ্রগন্য। যার অন্যতম প্রধান কারনগুলি ছিল এই ঘরানার সুফি-পীরদের জীবনের সরলতা, তাদের ব্যবহারে নম্রতা এবং ঈশ্বরের প্রতি নিঃস্বার্থ ভক্তি। আধ্যাত্মিক জীবন বজায় রাখার জন্য ইন্দ্রিয়ের উপযুক্ত নিয়ন্ত্রণ ও পার্থিব সম্পদের ত্যাগকে তারা তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করতেন। ঈশ্বর এবং ব্যক্তির মধ্যে প্রেমের বন্ধন ছাড়াও বিভিন্ন ধর্মের মানুষের মধ্যে সহনশীলতা বজায়। সেইসঙ্গে মতাদর্শ প্রচারে সহজ ভাষার ব্যবহার, সুলতানদের কাছ থেকে কোনরূপ অনুদান গ্রহণে অস্বীকৃতি। রাজনীতিতে সক্রিয় অংশ নেওয়া থেকে দূরে থাকার সিদ্ধান্ত তাদের জনসাধারনের কাছে আকর্ষণীয় করে তোলে।

এমনই চিশতী সিলসিলার এক অত্যন্ত জনপ্রিয় সুফি পীর ছিলেন মহম্মদ বিন আহমদ বিন আলি বুখারি যিনি পরবর্তীতে মেহবুব ই এলাহি, শেখ নিজামুদ্দিন আউলিয়া নামে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। তার পরিবার মূলত বুখারার বাসিন্দা হলেও মঙ্গোল আক্রমণের সময় তাঁরা ভারতে চলে আসে এবং প্রাথমিকভাবে লাহোর তারপর কিছু কাল বাদায়ুনে ও কালক্রমে দিল্লিতে স্থায়ী ভাবে বসবাস করতে শুরু করে। মা বিবি জুলেখা চেয়েছিলেন যাতে সন্তানের লেখা পড়া হয়। তাই চোদ্দ বছর বয়সে ধর্ম এবং বিজ্ঞানের উপর প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে ষোল বছর বয়সে মা এবং বোনের সাথে তিনি দিল্লিতে চলে আসেন। এখানে ধর্মীয় গুরু মাওলানা কামালউদ্দিন জাহিদের অধীনে ইলম-এ-হাদিস অধ্যয়ন শেষ করেন। কথিত আছে জুম্মা মসজিদে ফজরের নামাজে পড়া একটি আয়াত তাকে আল্লাহর স্মরণে তাঁর জীবন উৎসর্গে উৎসাহিত করে।

তিনি দিল্লির গিয়াসপুরে ৫০ বছর বসবাস করেন। সুলতান বলবনের রাজবংশের অবসান থেকে শুরু করে সুলতান আলাউদ্দিন খলজির ক্ষমতায় উত্থান, তাঁর মৃত্যু পরবর্তী বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি ও  তুঘলক রাজবংশের উত্থান এ সব কিছুরই তিনি সাক্ষী ছিলেন। কিন্তু কোন পরিবর্তনই তাঁর অস্তিত্বে আঘাত হানতে পারেনি, যার প্রধান কারন ছিল রাজনীতি তথা শাসক ও অভিজাতদের থেকে দূরে থাকার চিশতী দর্শন। তাই যখন সুলতান খসরু তাকে বিপুল পরিমাণ অর্থের প্রস্তাব দেন তখন তিনি তা গ্রহণ করলেও শীঘ্রই তা দরিদ্র দুঃস্থদের মধ্যে বিতরণ করেন। পরে সুলতান গিয়াসউদ্দিন তুঘলক ক্ষমতায় এসে তাঁকে সেই অর্থ ফেরতের  নির্দেশ দিলে তিনি উত্তর করেন যে ঐ বিপুল অর্থের প্রকৃত হকদার জনসাধারন এবং তা তাদের মধ্যে বিতরন করা হয়েছে। কথিত আছে যে অসন্তুষ্ট সুলতান ঐ মুহূর্তে বাংলা অভিযানে ব্যস্ত থাকায় ফিরে এসে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবার সিদ্ধান্ত নেয়। শেখ নিজামুদ্দিন আউলিয়াকে এবিষয়ে অবগত করা হলে তিনি বলেন “হিনোজ দিল্লি দুরস্ত” অর্থাৎ দিল্লী অনেক দূর। পরবর্তীতে দিল্লি পৌঁছানোর আগেই তার পুত্র মুহাম্মদ বিন তুঘলক নির্মিত প্যাভিলিয়ন থেকে পরে সুলতানের মৃত্যু হয়।
 
চিশতী সুফিরা সম্পদ, ধর্মীয় বিশ্বাস, পারিবারিক মর্যাদা ইত্যাদির ভিত্তিতে মানুষের মধ্যে কখনো কোনো বৈষম্য করেননি। যখন তুর্কিরা ইসলামিক ভ্রাতৃত্বের ধারণাটি অনেকাংশে ভুলে থেকেছিল তখন সহনশীলতা, বৈষম্যহীন এক উন্নত মূল্যবোধের চিত্র সুফি মনোভাবের দ্বারা সমাজে তাঁরা প্রতিষ্ঠা করেন, যা শুধুমাত্র তাদের ব্যতিক্রমী করেছিল তাই নয় বরং সামাজিক উত্তেজনা দূর করতেও অনেকাংশে সাহায্য করেছিল। প্রসঙ্গত শেখ নিজামুদ্দিন আউলিয়ার জামাতখানার দরজা সর্বদা মানুষের প্রতি সহানুভূতি, সমর্থন ও পরামর্শের জন্য উন্মুক্ত থাকত।

শেখ নিজে সারা দিন রোজা রেখে উপবাস করে ঈশ্বরের সাধনায় মগ্ন থাকলেও তাঁর খানকার লঙ্গরখানায় প্রতিদিন দিল্লি ও তৎসংলগ্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার মানুষ আহার করতে আসতেন। এমনকি তাঁর তরফে শিষ্যদের উপদেশ দেওয়া হয় যে জামাতখানায় আগত ব্যক্তিদের “প্রথমে সালাম, তারপর খাওয়া,তারপর কথা” এই ভাবে আপ্যায়ন করতে হবে। প্রায়শই তিনি নিজে সান্ধ্য আহারে তাঁর শিষ্য বা মুরিদদের সঙ্গ দিতেন যে সময় বিভিন্ন তাত্ত্বিক বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে আলোচনা চলত। শেখের অন্যতম মুরিদ আমীর হাসান সিজ্জি-র লেখা ফাওয়াদ উল ফাওয়াদ গ্রন্থ থেকে জানা যায় সুরাহ মাই’দা পড়ার পর প্রথমে লবন চাঁখার মাধ্যমে আহার পর্ব শুরু হত, তিনি আরও লেখেন যে শেখের আহার ছিল যৎসামান্য। একটি ছোট রুটি, কখনো বা রুটির টুকরো। তিনি এই সামান্য খাবারে কিভাবে সন্তুষ্ট হন জানতে চাইলে শেখ উত্তর করেন “যে লোকেরা আমার সামনে খায় আমি তাদের খাবার নিজের গলায় খুঁজে পাই মনে হয় যেন আমি সেই খাবার খাচ্ছি”।

চিশতী সুফিদের কাছে সামা বা কাওয়ালির এক বিশেষ তাৎপর্য ছিল। তাঁরা মনে করতেন কাওয়ালি যাবতীয় বিড়ম্বনা থেকে তাদের মুক্তি দেয়, এই গান তাঁরা দলবদ্ধভাবে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে হজরত মহম্মদ ও তাঁর চার খলিফাকে স্মরণ করার মাধ্যমে গাইত যার ধারা আজও নিজামুদ্দিন দরগায় গেলে লক্ষ্য করা যায়। তবে মধ্য এশিয়া থেকে আসা এই সামা–র ভারতীয়করণে নিজামুদ্দিন আউলিয়ার অন্যতম প্রিয় মুরিদ তথা তুতি ই হিন্দ আমির খসরুর   ভূমিকা ছিল অনন্য। হজরত আমির খসরুর জন্ম ১২৫৩ সনে উত্তরপ্রদেশের ইটাহ জেলায়। পিতা ৮ বছর বয়সে শেখ নিজামুদ্দিন আউলিয়ার কাছে ধর্মীয় শিক্ষার উদ্দেশ্যে নিয়ে গেলেও বালক খসরু পিতার উদ্দেশ্যে ঘোষণা করেন যে সে তার নিজের ধর্মগুরু নিজেই নির্বাচন করবেন। তাঁর পিতা খানকার অভ্যন্তরে প্রবেশ করলেও তিনি বাইরে বসে একটি কবিতা/দোহা রচনা করেন, যার সারমর্ম এই – "তুমি এমন পরাক্রমশালী রাজা যে তোমার প্রাসাদে কবুতর এসে বসলে সে বাজপাখি হয়ে যায়। একজন বহিরাগত এবং অভাবী ব্যক্তি আপনার দরজায় এসেছেন, দয়া করে তাকে জানান যে সে ভিতরে আসবে নাকি চলে যাবে” শেখ উত্তরে বলেন “যে ব্যক্তি সত্য জানে সে ভিতরে আসতে পারে যাতে আমরা কিছুক্ষণের জন্য আমাদের মধ্যেকার ঐশ্বরিক গোপনীয়তা বিনিময় করতে পারি। যদি সে অজ্ঞ হয়, তাহলে সে যেখান থেকে এখানে এসেছে সেই পথেই ফিরে তার যাওয়া উচিত”। এরপর তাদের আমৃত্যু পৃথক করা যায়নি।

হজরত আমীর খসরু তাঁর লেখার মান এবং তাঁর আদর্শের মৌলিকত্বের জন্য অদ্বিতীয়, তিনি একজন চমত্কার সঙ্গীতজ্ঞ ছিলেন, তবলা সহ বেশ কিছু বাদ্যযন্ত্র আবিষ্কারের কৃতিত্ব তারই। সামা সঙ্গীতকে কাওয়ালীতে পরিণত করার কৃতিত্বও তাকে দেওয়া হয়। তারানা, খেয়াল - এর মতো সঙ্গীত ঘরানার সৃষ্টিও তাঁর হাত ধরে। এছাড়াও তিনি ইমন-কল্যাণ, সাজগিরি এবং সর্পর্দার মতো অসংখ্য নতুন রাগ এবং ত্রিতাল, ঝুমরা, চৌতাল সৃষ্টির মাধ্যমে ভারতীয় সঙ্গীতকে এক নতুন পর্যায়ে উন্নীত করেন। শুধু তাই নয় শেখ নিজামুদ্দিন আউলিয়ার নির্দেশে আপামর জনসাধারনের বোধগম্যের উদ্দেশ্যে দরবারের অভিজাতদের ফার্সি এবং তুর্কি ভাষা ও স্থানীয়দের খারি-বোলি এবং ব্রজ ভাষার সংমিশ্রনে হিন্দভি (উর্দু) ভাষায় দোহা, ধাঁধা এবং গান লিখতে শুরু করেন। যার মধ্যে অন্যতম ছিল ছাপ তিলক সাব ছিনি রে মসে, মান কুন্ত মউলা জিহাল এ মিসকিন ইত্যাদি। 

গুরু শিষ্যের সম্পর্ক এতটাই নিবিড় ছিল যে সারাদিন আপামর মানুষের অভাব অভিযোগ শুনলেও রাতের বেলায় আউলিয়া যে সময়টুকু অন্তরালে থাকতেন সে সময় খানকায় প্রবেশের অনুমতি একমাত্র আমীর খসরুরই ছিল। তিনি নিত্য নতুন তারানা লিখে এনে সবার আগে শেখের কাছেই শোনাতেন শেখও তা নিমগ্ন হয়ে শুনতেন। আজকের দিনে যখন সব সম্পর্কই খুব শিথিল তখন ভাবলেও অবাক লাগবে যে আজকের নিজামুদ্দিন দরগায় যে বসন্ত উৎসব পালিত হয় তার পিছনেও এই গুরু শিষ্যের সম্পর্কের সমীকরণের অবদান রয়েছে। শেখ তাঁর প্রিয় ভাইপো খাজা তাকিউদ্দিন নুহ এর মৃত্যুতে খানিক ৬-৭ মাসের বেশি শোকাহত ছিলেন। যা তাকে শারীরিক মানসিক সমস্ত ক্ষেত্রেই বিধ্বস্ত করে তুলছিল এমন সময় হজরত আমীর খসরু আউলিয়ার খানকার সামনে কিছু হিন্দু মহিলাদের হলুদ বস্ত্র পরিহিত অবস্থায় সর্ষে ফুল হাতে “সকল বন ফুল রাহি সারসো” গান গাইতে লক্ষ্য করেন, মহিলাদের জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানতে পারেন যে এই ভাবে মহিলারা তাদের ঈশ্বরকে খুশি করার চেষ্টা করেন। তারপর আর কি খসরু অনুরূপ সেজে শেখের সামনে উপস্থিত হলে শেখ পুনরায় উচ্ছসিত হয়ে ওঠেন। 

খসরু এতটাই অসহায় ছিলেন যে তাঁর পীরের মৃত্যুর ছয় মাস পরে তিনি মারা যান। যেহেতু ইসলাম তাদের কবর ভাগ করার অনুমতি দেয়নি, তাই আমীর খসরুকে তার পীরের পাশে ইয়ারনি চবুতরে দাফন করা হয়েছিল।

বলাবাহুল্য সুফি দর্শনে প্রিয়তম হল ঈশ্বর বা প্রিয়তমের সঙ্গে বন্ধন ঐশ্বরিক। যে ব্যক্তি ঈশ্বরের সাথে একাত্ব কামনা করেন সেই প্রকৃত প্রেমিক। যেটিকে বলা হয় ইশক-ই-হাকীকী। এটি এই বিশ্বাসকে বোঝায় যে শুধুমাত্র ঈশ্বরই ভালবাসার যোগ্য এবং তিনিই একমাত্র যিনি তাঁর প্রতি ভক্তের ভালবাসাকে ফিরিয়ে দিতে পারেন। তাই একজন সুফি সাধকের মৃত্যুকে প্রিয়জনের সাথে মিলন হিসেবে গণ্য করা হয় এবং মৃত্যুবার্ষিকী বা উরস দিবসকে বিবাহবার্ষিকী হিসেবে পালন করা হয় যা কোন শোকের উপলক্ষ নয়। আমীর খুসরোর কালাম অনুযায়ী তাই যথার্থই বলা যায় “খুসরো দারিয়া প্রেম কা উলটি ওয়া কি ধার যো উত্রা সো ডুব গয়া যো ডুবা সো পার, ইয়ে দুনিয়া মেরে বাবুল কা ঘর, ও দুনিয়া সাসুরাল”।।  

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ