আঙুলের ফাঁকে আমি সভ্যতাকে
বড় হতে দেখেছি কত যুগ ধরে, তরতরিয়ে
বনবাসী মনটাকে একটু ছুঁয়ে দেখতে
অন্ধকার নেমেছিল সেবার যাত্রাপথে
সে তখন আসেনি আমার ভাবনায়
ফাগুনের সুগন্ধ মেশানো বসন্তের সুঘ্রাণে
সে অবশ্য এসেছিল রাঙা হয়ে
আমার অসমাপ্ত উপাখ্যানে।
আকাশের অন্তিম গোধূলিতে যখন সূর্য অস্তাচলে
তখনও সে ছিল প্রস্ফুটিত গোলাপের কুঁড়ি সেজে
একযুগ হেমন্ত ভ' রে এনেছিল একদিন
আমার জন্য
বাতাসের ঐশী সুখে
গেল বছরের সবচেয়ে প্রিয় মুহূর্তকে সাক্ষী রেখে
আবারও দেখা হল তার সাথে নীলাকাশের ঠিকানায়
তার মোহময়ী রূপ লাবণ্যে আমি
আবারও মোহিত হলাম
সবুজ অরণ্যের প্রাচীন মানব মানবীর
অতৃপ্ত মিলনের উচ্ছ্বাসে।
আমাদের মিলিত বাসনা
কোন ভাবেই চরিতার্থ হল না ঠিকই
তাই সে ফিরে গেল আবারও
অসীম দিগন্তের পথিক হ' য়ে
আমি বসে থাকলাম একা বনবাসী হ' য়ে।
আবারও ফাগুনের গা ঘেঁষে এল বসন্ত
পলাশের ডালে খুনসুটি ছড়িয়ে পড়ল হামাগুড়ি দিয়ে
শালিকের ধূসর ডানায় চেপে একরাশ চাপা উত্তেজনা
তখন খেলছিল সোনালি মাঠ জুড়ে
একদল ধবল বক উড়ে যাচ্ছিল
শুভ্র আকাশের নিচে
মাঠ থেকে ক্রমশ ফিরে যাচ্ছিল রোদ্দুর
গোধূলিকে আমন্ত্রণ জানিয়ে
ঠিক সেই সময়ে এক পশলা বৃষ্টি এলো
হাঁসতে হাঁসতে
একদল নবাগত হরিণ-হরিণী ছুটে গেল
অরণ্যের গহনে
তখন তোমায় আবারও দেখলাম—
বঙ্কিমচন্দ্রের কপালকুণ্ডলা হয়ে
নদীতে ডুবে যাচ্ছ তুমি
শুধু নবকুমার আসেনি তোমাকে বাঁচাতে।
এভাবেই প্রতিদিন কতো কপালকুণ্ডলা
ডুবে যায় নদীর জলে
নিজেকে নির্দোষ প্রমাণিত করতে
শত নবকুমার তাকিয়ে থাকে দূর থেকে, অভিমানে।
1 মন্তব্যসমূহ
বাহ্ দারুন লেখা।
উত্তরমুছুন