ad

মাসিক ই-পত্রিকা ‘উৎস’ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে(বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন)।
অনুগ্রহ করে পত্রিকার ইমেলে আর লেখা/ছবি পাঠাবেন না।

হায় রুদ্রেশ্বর! -সুভাষ কর

 আবারো রুদ্রেশ্বর,

আরো একটা শিবরাত্রি এসে গেছে আজ!

অনেক তো হ'ল রাজকীয় দুধস্নান-

বিনা জ্বরে, নিউমোনিয়া-বিহীন। 

বেশ তো কাটিয়ে দিলে 

বিস্মৃত আত্মসত্তার অগণিত দিন;

ফি'বছর পাওনার খাতার মুফত্ আয়েসে।

হায় রুদ্রেশ্বর! 

যত্নে ঢালা ধনীর গর্বমেশানো ভক্তি-ঘুষের সাথে

সরল বিশ্বাসী কিছু হতভাগার কষ্টার্জিত তৃপ্তি 

আর কিছু ন্যায্য চাওয়াও তো মিশে থাকে-

তবুও এত নিস্পৃহ? এমন প্রতিক্রিয়াহীন?

বহুকথিত তোমার রুদ্ররূপ অসাড়, অপ্রকট?

একটিবার নীচে তাকিয়ে দেখ দিকি-

এই মর্ত্যের সময় এখন বড়ই দুঃসহ।

করোনা নামের ভাইরাস-আতঙ্ক-

মহাকালের হিসেব ছাপানো মৃত্যুর মহামিছিল,

এরই মাঝে দেখি ধর্ম নিয়ে হানাহানি, 

ইতঃস্তত গজিয়ে উঠা রাজনীতির অপবিত্র হাট।

স্বার্থের খেলায় ন্যূনতম নীতিবোধও অনুপস্থিত!

তাই হে রুদ্রেশ্বর! 

বড়ই অসহ্য ঠেকছে তোমার এই কালঘুম।

ভক্তদের কাছে ঘোষিত কর তোমার অক্ষমতা –

তোমারি সঞ্জীবিত আদেশনামায় নিষিদ্ধ হোক 

অর্থহীন তোমার এই হিমস্নান –

যা তোমাকে করেছে বিবশ কিংবা অথর্ব।

যদি বলতে চাও,

তোমার নিদ্রাভঙ্গে এই শীতল দুধ অকেজো, 

সম্মিলিত প্রতিরোধের আঁচে 

তাকে তাতিয়ে নেবার নিদানটুকু তো দাও!

লাখো লাখো ভক্তের কানে পৌঁছে দাও 

শুধু এই বার্তাটুকুই-

শিবলিঙ্গের এই সুখ-সুখ স্নান মুলতুবী থাক,

আপাততঃ, অন্ততঃ কিছুটা দিন -

যতদিন না মানুষের দুঃখতাপের ক্ষোভস্পর্শে 

হিমধ্যান ভেঙে যায় তোমার;

যতদিন না স্বমহিমায় জেগে উঠো তুমি।

যতদিন না নরকের দ্বারমুখী এই পৃথিবী

মুখোশধারী সেবকদের রুধিরে স্নাত হয়।

স্বামীর কল্যাণকামী অগুণতি নারীর, আর

সন্তান মানুষ হয়ে উঠার আকুতি বুকে ধরা

অসংখ্য মায়ের স্বপ্ন সাকার করতে

আত্মরক্ষার অব্যর্থ কবচ পরিয়ে

যৎসামান্য উপার্জিত সুখের হাসিটুকু 

রাখতে পার অম্লান;

যদ্দিন না পারছ আমাদেরকে বাঁচাতে

অসময়ে তলানোর এই ভবিতব‍্য থেকে।

আমাদেরই অচেতনে জন্ম নেয়া পাপসমুদ্র 

আর স্ববর্ষিত এ অভিশাপ থেকে

যদ্দিন না নিশ্চিত করছ আমাদের নিস্কৃতি।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ