ad

মাসিক ই-পত্রিকা ‘উৎস’ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে(বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন)।
অনুগ্রহ করে পত্রিকার ইমেলে আর লেখা/ছবি পাঠাবেন না।

মৈনাকের সাথে কিছুক্ষণ -- প্রতীক মিত্র

ন্ধ্যে।বাড়ি ফেরার তাড়া। ট্রেনে বেজায় ভীড়।দাঁড়ানোরও জায়গা পাওয়া দুষ্কর।কর্মক্ষেত্র থেকে ক্লান্ত শরীরে বাড়ি ফিরতে মরিয়া এইসব মানুষগুলোর কাছে কোভিড প্রোটোকল হাসির উদ্রেক করে।ট্রেন বালি থেকে উত্তরপাড়ার দিকে এগোলে বাইরে আলোর রোশনাইএ একটু অবাক লাগতে পারে।এখন তো আর কোনো উৎসব বাকি নেই।মৈনাক অবাক হয়না।ওর এরই মধ্যে বন্ধুর সাথে কথা হয়ে গেছে।আজ বিয়ে বাড়ি আছে।ক্যাটারিং।মৈনাকের বন্ধুই মৈনাককে এইসবে ঢুকিয়েছে।ফ্যাক্টরি থেকে ফিরে পা আর চলতে চায় না।পাড়ার ক্লাবঘরের ক্যারমটা মনটা উদাস করে দেয়।তবু দুটো কাঁচা পয়সা তো মিলবে।মন্দ কি!বাড়িতে মা’কে ফোন করে স্কুলের সাদা-কালো ড্রেসটাকে বোঁচকা থেকে বের করতে বলে।ইস্ত্রী ও গিয়ে নিজে করে নেবে।মা জানে ছেলে খেয়েদেয়ে রাত করে ফিরবে।মন বারণ করতে চাইলেও মুখে সেই না আর বেরোয় না।ছেলের বাবা বেঁচে থাকলে না হয়!মৈনাকের বিয়েবাড়ি পৌঁছতে পৌঁছতে তাও আরো একঘন্টা লাগবে।বন্ধু যেন ততক্ষণ একটু সামলে নেয়। বিয়েবাড়িতে খাবার পরিবেশনের সময় অতিথিদের মধ্যে ওরই কলেজের বান্ধবী বেরোলে ও একটু ইতঃস্তত বোধ করে।তারপর পাত্রীপক্ষের তরফে কেউ ওদের দলের একজন বয়স্ক মানুষকে দু-চার কথা শোনালে ও রুখে দাঁড়ায়।‘রেসপেক্ট!’একবার বললে কেউ কেউ মুচকি হাসে। তার মধ্যে ওর ওই বান্ধবীর ফ্যামিলির কেউ কেউও ছিল।বান্ধবী মৈনাককে চেনে।জানে তার অল্পেই মাথা গরম হয়।দ্বিতীয়বার আবারো বলে ‘রেসপেক্ট!’ কিছুক্ষণ চিৎকার চেঁচামেচি চলে।তারপর আবারো সব ঠান্ডা হয়। মৈনাক মনে মনে ভাবে ওর যদি স্কুলের সময়ের চেহারাটা থাকতো!কলেজে ভর্তির আগেটাই বাবা মারা গেল।ফলে ফ্যাক্টরি।কাজের লোড ইত্যাদি করতে গিয়ে শরীরটাই গেল ভেঙে।তবু, ক্যাটারিংএর লোকটার জন্য বলে ওর বেশ লাগলো।ফ্যাক্টরির পরিশ্রমটা আর যেন রইলো না।এমনকি কলেজ রেগুলার না করার ক্ষোভও নয়।ক্ষোভ ছিল না একদম শেষে ঠান্ডা খাবার খেতে খেতেও।মাঝখানে মায়ের সাথে কথায় জানতে পারলো মা খেয়ে নিয়েছে আগেভাগেই।মাকে ভেবেছিল ওই বান্ধবীর কথাটা বলবে।তারপর যে কি মনে হল।আর বলেনি।একটু দুর থেকে রানিং ট্রেনের আওয়াজ কানে এল বলেই কিনা কে জানে...
 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ