ad

মাসিক ই-পত্রিকা ‘উৎস’ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে(বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন)।
অনুগ্রহ করে পত্রিকার ইমেলে আর লেখা/ছবি পাঠাবেন না।

এক যুগান্তকারী আবিষ্কার আর এক মেধাবিনীর প্রতি বঞ্চনার ইতিহাস (প্রথম পর্ব) -সোমনাথ দত্ত

লেখাটি জুলাই ২০২১ সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছে। 

ডি এন এ, নামটাই যথেষ্ট। এর পুরো নাম যে ডি অক্সি রাইবো নিউক্লিক অ্যাসিড, এটাও যারা জানেন না, তারাও কিন্তু বেশ ভালোভাবে বোঝেন এই বস্তুর গুরুত্ব কতখানি। অন্তত পরিচয় সনাক্তকরনের জন্য ডি এন এ টেস্টের নাম শোনেননি, এমন লোক খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। বংশগতি আর জৈববৈশিষ্ট্যের  প্রধানতম ধারক ও বাহক, জীবকোষের ক্রোমোজোমকুণ্ডলীর গঠনগত ও কার্যগত একক এই ডি এন এ। আর এর আণবিক কাঠামো আবিষ্কার- সে তো বিজ্ঞানের মহাজগতে রীতিমতো এক স্তম্ভস্বরূপ। 

এই আলোচনার মূল প্রসঙ্গও কিন্তু এই ডি এন এ'রই আণবিক গঠন আবিষ্কার এবং এই আবিষ্কারের সাথে জড়িত বিজ্ঞানীদের কর্মকাণ্ডের কথা। ছোটবেলার দশম শ্রেণীর পাঠ্যবই আমরা যারা ভালোভাবে পড়েছি তাদের আশা করি মনে আছে ডিএনএ আবিষ্কারের পেছনে জড়িত  দুই বিজ্ঞানী ওয়াটসন এবং ক্রিকের নাম। ১৯৬২ সালে ডিএনএ এর গঠন আবিষ্কার করার জন্যই তারা দুজনে নোবেল পুরস্কার পান। আবিষ্কার করার মাত্র চার বছরের মধ্যেই এত বড় স্বীকৃতি পাওয়ার ঘটনা কিন্তুইতিহাসে বিরল। পুরস্কার পাবার পর ওয়াটসন ও ক্রিকের নাম সাধারণ মানুষের  মধ্যে এতটাই পরিচিতি লাভ করে যে এর মূল আবিষ্কারকের নাম সকলের অজানাই রয়ে যায়। যদিও কোনো কোনো লেখক তাঁর নাম বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থীদের জানার জন্য পাঠ্যপুস্তকের বর্ণনায় এনেছেন, কিন্তু আদতে এই যুগান্তকারী আবিষ্কারের কৃতিত্ব থেকে তিনি  বঞ্চিতই রয়ে গেছেন পুরোদস্তুর। তিনি আর কেউ নন, আমাদের আজকের আলোচনার প্রধান চরিত্র বিজ্ঞানী রোজালিন্ড ফ্র্যাঙ্কলিন। 

ডিএনএ’র আণবিক গঠন আবিষ্কারের পরপরই আণবিক জীববিজ্ঞান শাখাতে রীতিমত এক বিপ্লব শুরু হয়ে গিয়েছিল। বিংশ শতাব্দীর শেষের দিকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার ছিল রিকম্বিনেন্ট ডিএনএ, যা ব্যবহার করে ইচ্ছেমত প্রোগ্রাম করা ডিএনএ অন্য কোনো অর্গানিজমের মধ্যে স্থাপন করা যেত। ফলস্বরূপ পরবর্তী প্রজন্মকে মানুষ যে যে বৈশিষ্ট্যে সমৃদ্ধ দেখতে চায় সেসব বৈশিষ্ট্য, চরিত্র এবং গুণাগুণ তৈরি করার  সম্ভাবনা দেখা দিতে লাগলো। রোজালিন্ডের আরেকটি অবদানের কথা না বললেই নয়, সেটা হচ্ছে ভাইরাস নিয়ে তার জটিল এবং অত্যাধুনিক পরীক্ষামূলক গবেষণা। বর্তমানে স্ট্রাকচারাল বায়োলজি বিষয়টির ভিত তিনিই গড়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু প্রসঙ্গ সেটা নয়। প্রশ্নটা হলো ডি এন এর আণবিক কাঠামো আবিষ্কার করা সত্ত্বেও কেন রোজালিন্ড সম্পূর্ণরূপে বঞ্চিত হলেন এই কৃতিত্বের অধিকারিনী হতে। ঠিক সে বিষয়ে  জানার জন্য আমাদেরকে জানতে হবে আরো অনেক কিছু।

চিত্র: রোসালিন্ড ফ্রাঙ্কলিন তখন প্যারিসে

১৯৫০ সালে কেমব্রিজের কিংস কলেজে গবেষক হিসেবে যোগদান করেন রোজালিন্ড। পদার্থবিজ্ঞানী জন রেনডেল সেখানে পদার্থ, রসায়ন এবং জীববিজ্ঞানীদের নিয়ে একটি গবেষণা দল গঠন করেন। এই দলের উদ্দেশ্যই ছিল ডিএনএ’র গঠন আবিষ্কার করা। তখন পর্যন্ত এ সম্পর্কে যতটুকু জানা ছিল তা হলো ডিএনএ জেনেটিক তথ্য সরবরাহ করে এবং এর প্রোটিনের অণুগুলো প্যাঁচানো আকার ধারণ করতে পারে। কিন্তু তখনও পর্যন্ত কেউ এর বাইরের বা ভেতরের গঠন আবিষ্কার করতে পারেননি।

এই দলের সদস্য হিসেবেই কাজ করতো রেমন্ড গস্লিং নামে এক ছাত্র। তার কাজ ছিল ডিএনএ’র X-ray ছবি তোলা। তখনকার সময়ের নিরিখে তার ছবিগুলোও ছিল   চমৎকার। কিন্তু ছবিগুলো থেকে তথ্য বিশ্লেষণ করার মতো কেউ তাদের দলে ছিল না। তখন জন রেনডেল রোজালিন্ড এর কথা শুনে তাকে একটি ফেলোশিপ দিয়ে কিংসে নিয়ে আসেন। তাঁর নতুন কাজ কী হবে সে সম্পর্কে রেনডেল তাকে আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন। রোজালিন্ডকে লেখা তার কথাগুলো ছিল এরকম-

“After very careful consideration and discussion with the senior people concerned, it now seems that it would be a good deal more important for you to investigate the structure of certain biological fibers in which we are interested. This means that as far as the experimental X-ray effort is concerned, there will be at the moment only yourself and [the graduate student] Gosling, together with the temporary assistance of a graduate from Syracuse, Mrs. Heller.”

চিত্র: মরিস উইলকিনস

অর্থাৎ রেনডেল পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছিলেন, রোজালিন্ড আলাদা একটি প্রজেক্টে একাই  কাজ  করবেন  এবং  তাঁর  সাথে দুজন শিক্ষার্থী থাকবে। এরকম পরিবেশ রোজালিন্ডকে পরবর্তীতে একা কাজ করতে ভীষণ উৎসাহিত করেছিল। তবে রেনডেলের পরেই পদমর্যাদায় কিংসের সেই  ল্যাবে যার অবস্থান ছিল তাঁর নাম মরিস উইল্কিন্স। রেনডেলের ছাত্র ছিলেন উইল্কিন্স; যুদ্ধের সময় পারমাণবিক বোমা নিয়ে কাজের অভিজ্ঞতাও ছিল তাঁর। রেনডেল ডিএনএ’র কাজ পুরোপুরি রোজালিন্ডকে করতে দিয়েছিলেন। তাঁর আগে এই কাজটি করছিলেন উইল্কিন্স। উইল্কিন্স ভেবেছিলেন, পরে কোনো অভিজ্ঞ বিজ্ঞানী এলে টিমের সবাইকে নিয়ে এই বিষয়ে কাজ করবেন। কিন্তু রোজালিন্ড তাঁর কাজে কোনোভাবেই অন্যের হস্তক্ষেপ পছন্দ করলেন না। তিনি কাজ একাই করবেন বলে ঠিক করে রেখেছিলেন। পরবর্তীতে এই নিয়ে উইল্কিন্সের সাথে বিবাদেও জড়িয়ে পড়েছিলেন রোজালিন্ড। এখানে উল্লেখ্য, ওয়াটসন এবং ক্রিকের সাথে আরেকজন, যিনি ১৯৬২ সালে ডিএনএ’র জন্য নোবেল পেয়েছিলেন, তিনি হচ্ছেন এই মরিস উইল্কিন্স।

তবে রোজালিন্ডের নিজের কাজ ভালোই এগোতে লাগল। ডিনএনএ-কে কেলাসে পরিণত করা, তারপরে এক্স-রে ব্যবহার করে ছবি তোলা, দুই-ই সে সময় ছিল দুঃসাধ্য কাজ। রোজালিন্ড তার কাজের জন্য বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরি সূক্ষ্ম তন্তুর মতো ‘কাফ থাইমাস ডিএনএ স্যাম্পল’ ব্যবহার করেছিলেন। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বানিয়ে নিয়েছিলেন জৈব অণুর পক্ষে উপযুক্ত এক এক্স-রে ক্যামেরা। যার সাহায্যে ছবিও উঠতে লাগল চমৎকার। বিভিন্ন আলোচনা চক্রে রোজালিন্ড সে সমস্ত ফলাফল দেখাতেও লাগলেন।

চিত্র: কৃতিত্বের বাহক দুই বিজ্ঞানী ওয়াটসন ও ক্রিক

একই সময়ে ডিএনএ-র গঠন নিয়ে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করছিলেন জেমস ওয়াটসন ও ফ্রান্সিস ক্রিক। ডিএনএ হলো এক অতিমাত্রায় লম্বা অণু। যার গঠনের মধ্যে রয়েছে অসংখ্য সুগার আর ফসফেট অণু।
অ্যাডেনিন, গুয়ানিন, থাইমিন ও সাইটোসিন, এই চার রকম নিউক্লিয়োটাইড বেস জুড়ে এর কাঠামোটি তৈরি। 
ডিএনএ যদি একটা মালা হয়, তাহলে এই অণুগুলো হবে মালার পুঁতি। ওয়াটসন ও ক্রিক ডিএনএ অণুর রাসায়নিক সঙ্কেত থেকে জটিল গাণিতিক পদ্ধতিতে বিভিন্ন পরমাণুর দূরত্ব এবং কোণ বিশ্লেষণ করে সুগার-ফসফেট-বেসগুলো কী ভাবে সাজানো থাকে, তার একটা ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। গাণিতিক বিশ্লেষণের সঙ্গে তাদের দরকার ছিল পরিষ্কার এক্স-রে চিত্র, যা তাদের গবেষণাগারে তখন পাওয়া যাচ্ছিল না।

ডিএনএ’র ল্যাবে রোজালিন্ড এবং তাঁর ছাত্র গস্লিং একাই কাজ করে যাচ্ছিলেন। তারা X- ray দিয়ে ছবি তুলে ডিএনএ’র উপাত্ত সংগ্রহ করছিলেন যাতে করে এর গঠন সম্পর্কে কিছু জানা যায়। এই বিষয় নিয়ে তাদের পাঁচটি পেপার লেখার কথাও ছিল। রোজালিন্ডের কাজ ছিল অনেকটা এরকম-- তাকে X- ray Camera-কে এমনভাবে সেট করতে হবে যাতে করে এটা থেকে সূক্ষ্ম বীম বা রশ্মি বের হয়। আসলে ছবি  তুলতে হলে  সূক্ষ্ম এবং  পাতলা  রশ্মির  দরকার ছিল কারণ ডিএনএ নিজেও লম্বা চিকন তন্তুর মতো দেখতে। এর আগে এ বিষয়ে যেসব কাজ করা হয়েছিলো সেখানে মোটা তন্তুর ডিএনএ ব্যবহার করা হয়েছিলো। কিন্তু পাতলা তন্তু নিয়ে পরীক্ষা করতে রোজালিন্ডের কোনো সমস্যায় পড়তে হয়নি, কারণ এর আগে কয়লা নিয়ে কাজ করতে গিয়ে সেখানে ক্লে -র আণবিক গঠন নিয়ে তিনি গবেষণা করে এসেছেন। তাই তিনি ভালোভাবেই জানতেন, পুরোপুরি কেলাসিত হয় না এমন পদার্থগুলোকে কীভাবে আণবিক এককে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
 
একটি গ্লাসের রড দিয়ে তিনি ডিএনএ ফাইবারকে টেনে ধরলেন এবং প্রত্যেকটি ফাইবারকে সমান্তরালভাবে সাজালেন। কিন্তু এক্স রে বিক্ষিপ্ত করার জন্য ফাইবারগুলো ছিল অতিরিক্ত পাতলা। তাই তিনি সেগুলোকে মাকড়শার জালের মতো করে সাজালেন যাতে এদের আয়তন একসাথে মিলে বেড়ে যায়। এরপর এই জালের আকারের সাথে মিল রেখে তিনি এক্স রে বীম এই তন্তুগুচ্ছের উপর ফেললেন। তার ধারণা ছিল এইভাবে কাজটি করলে ডিএনএর পরিষ্কার ছবি পাওয়া যাবে। এই স্টাডি থেকে জানা গিয়েছিল যে, আর্দ্র পরিবেশে ডিএনএ কেমন আচরণ করে। রোজালিন্ডের ধারণা ছিল, আর্দ্রতাকে সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেই আরও পরিষ্কার ছবি পাওয়া যাবে। এই কাজ করতে করতে তিনি বুঝতে পারলেন, ডিএনএ দু’ধরনের অবয়বে থাকতে পারে– A type এবং B type, যা নির্ভর করবে কতটুকু জল তন্তু বা ফাইবারগুলো টানতে পারছে। যখনই ফাইবারগুলোর আশেপাশে বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ৭৫% হলো, রোজালিন্ড ডিএনএ’র আরও পরিষ্কার এবং সূক্ষ্ম ছবিটি পেলেন যেটা গস্লিংএর পাওয়া ছবি থেকে অনেক বেশী তথ্য দিতে সক্ষম ছিল। এই ছবিগুলোকে রোজালিন্ড নাম দিলেন Dry, A-form of DNA। আর্দ্রতা যখন ৯৫% এ গিয়ে দাঁড়ালো তখন এক্স রে’র যে ছবি পাওয়া গেল সেখানে ফাইবারের অণুগুলোর আকার অনেকটা ক্রসের মতো ছিল এবং এই ক্রস সাইন ডিএনএ যে সর্পিল আকৃতির সেটা প্রমাণ করে দিল। কিন্তু পরের ছবিতে আগেরটার তুলনায় কম তথ্য পাওয়া যাচ্ছিলো।
 
এই পরীক্ষা থেকে তিনি এই উপসংহারে এলেন যে wet DNA সর্পিল আকৃতির হয়। তিনি এই ক্রসের নাম দিলেন B-form of DNA। এই পরীক্ষা থেকে আরও একটি তথ্য উদঘাটন করলেন রোজালিন্ড। যেহেতু ডিএনএর অণুগুলো খুব সহজেই বাতাস থেকে জল টানতে এবং আবার বাতাসে ছেড়ে দিতে সক্ষম, তাই ডিএনএ’র সাথের ফসফেট সুগারের অবস্থানগুলোও একই সাথে নির্ণয় করা সম্ভব। তিনি এই পরীক্ষা থেকে একটি মীমাংসায় এলেন। সেটা হচ্ছে DNA অণুর চারিদিকে অবস্থিত জলের খুব কাছাকাছি এই ফসফেট সুগারগুলো অবস্থান করে এবং বেস বা নাইট্রোজেন ক্ষারগুলো ডিএনএ হেলিক্সের  ভেতরে সিঁড়ির মতো করে অবস্থান নেয়। যদিও দুটি ক্ষেত্রেই তার প্রমাণ এবং অনুমান সঠিক ছিল, কিন্তু  এর   মাধ্যমে    রোজালিন্ড  কেবল  একটি  হেঁয়ালির  মীমাংসা   করতে পেরেছিলেন। আরও দুটি ধাঁধার মীমাংসা তখনও বাকি ছিল। একটি হচ্ছে, প্রত্যেকটি সিঁড়ি দুটি বেস নিয়ে গঠিত কিনা। অপরটি হচ্ছে, যে ফসফেট তন্তু দিয়ে ফাইবারের অণুগুলো সর্পিলভাবে গঠিত সেগুলো পরস্পর বিপরীতমুখী কিনা।
 
এই প্রশ্নগুলোর উত্তর পাবার জন্য রোজালিন্ড আরও ডাটা সংগ্রহ করে যাচ্ছিলেন। কিন্তু এর মধ্যে ওয়াটসন এবং উইল্কিন্সের সাথে তার বিবাদ বাঁধে। A এবং B type DNA এর ছবি তোলার পর উইল্কিন্সের খুব আগ্রহ হয় যে তিনি ছবিগুলো বিশ্লেষণ করবেন। কিন্তু রোজালিন্ড সেটা চাইছিলেন না। উইল্কিন্স B type DNA এর ছবি দেখে রোজালিন্ডকে বললেন, ডিএনএ যে ডাবল হেলিক্স সেটা এই ছবির মাধ্যমেই প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু রোজালিন্ড ড্রাই বা A type ডিএনএ থেকেও একই ধরনের ছবি আশা করছিলেন। তাই তখনই তিনি কোনো উপসংহারে আসতে চাইছিলেন না। এই বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে কিংস কলেজে থাকাকালীন অনেক বাকবিতণ্ডা হয়।
 
অন্যদিকে, এক কনফারেন্সে বিজ্ঞানী ওয়াটসন রোজালিন্ডের ডাটাগুলো নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন। শুধু তাই নয়, ওয়াটসন রোজালিন্ডের দেয়া লেকচারকে বিউটি কন্টেস্টের সাথেও তুলনা করেন। আসলে রোজালিন্ডের কথাগুলো থেকে ওয়াটসন বুঝতে পেরেছিলেন যে তিনি এবং তার ছাত্র ক্রিক রোজালিন্ডের কাজের থেকে অনেক পিছিয়ে আছেন। তাই সেদিন সেই কনফারেন্সে ওয়াটসনের উদ্দেশ্যই ছিল রোজালিন্ডের ডিএনএ ডাটা নিয়ে তাকে ভুল ধারণা দেয়া, যাতে রোজালিন্ডের কাজে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করা যায়। যদিও এই ধরনের বক্তব্য রোজালিন্ডকে নিজের কাজ নিয়ে তাঁর আত্মবিশ্বাসকে এক চুলও নড়াতে পারেনি। পরবর্তীতে ওয়াটসন এবং ক্রিক যখন রোজালিন্ডের উপাত্তগুলো থেকে ধারণা নিয়ে নিজেরা ডিএনএ’র মডেল তৈরি করেন তখনও রোজালিন্ড সেখানে বড় ধরনের ভুল ধরে ফেলেছিলেন, যার কারণে তাদের কাজ সম্পূর্ণ ভুল বলে প্রমাণিত হয়। বিখ্যাত বিজ্ঞানী লরেন্স ব্রেগ তাদের এই গবেষণাকে “The biggest fiasco” বলে সম্বোধন করেন এবং তাদেরকে ডিএনএ'র কাজ থেকেও সরিয়ে নেন।
 
তবে ঘটনাক্রম এখানেই থেমে থাকেনি, জল গড়িয়েছে আরও বহুদূর। আর সেসব ঘটনা নিয়েই এই আলোচনা এগিয়ে যাবে পরবর্তী পর্বে….
 
দ্বিতীয় তথা অন্তিম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন


সোমনাথ দত্ত



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ