ad

মাসিক ই-পত্রিকা ‘উৎস’ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে(বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন)।
অনুগ্রহ করে পত্রিকার ইমেলে আর লেখা/ছবি পাঠাবেন না।

শরৎপল্লী -অধীর কুমার রায়



তোমাকে বলা হয়নি লিনা।
আমাদের শরৎপল্লীতে যদি কখনো আসো
দেখবে অবিশ্রান্ত বৃষ্টিতে মাথাল মাথায়
রমজান চাচা এখনো বলদের হালে চাষ করে।ধানের চারা গুলি একটু বড়ো হলে নীচে জমে থাকা জলে অসংখ্য কাঁকড়ার সংসার।আর দেখবে আমাদের খড়ের ঘরের জানালা দিয়ে  লেবু পাতা বেয়ে কী সুন্দর টুপটাপ বৃষ্টির জল গড়িয়ে পড়ে। কচু পাতার বিন্দু বিন্দু  টলমল জল তোমার হৃদয়ে দোলা দেবে ।আর যদি ওই শিমুলতলী মাঠের দিকে তাকাও, দেখবে কিনু গোয়ালার এঁড়ে বাছুর লেজ তুলে হাম্বা রবে কেমন দৌড়ায়।

ভিজে অন্ধকার রাতে শুয়ে শুয়ে যখন তুমি রূপকথার রাজ্যে হারিয়ে যাবে, তখন  ধীরে ধীরে শুনবে মিষ্টি ঝিঝির ডাক।আর 'মকমক' ভেকের ডাক তোমার ভালো লাগবেই।

বর্ষার সময় আমাদের গ্রাম প্লাবিত হয়।সেই অন্ধকার দুঃখের মাঝে মন্মথ কাকা জ্যোৎস্না রাতে ডিঙিতে বসে কী মধুর বাঁশি বাজায়!আমার মন উদাস হয়ে যায়!মন্মথ কাকার মতো যদি অমন বাঁশি বাজাতে পারতাম।
আমাদের জলির বিলের অসংখ পদ্মের সুবাস ,শিমূলতলীর ঠান্ডা বাতাসে ভেসে এসে তোমাকে কিছু বলবে, তুমি মুগ্ধ হয়ে যাবে।
তোমাকে বলা হয়নি লিনা-
আমাদের গ্রামের পশ্চিম দিগন্ত ধরে,গোধূলি বেলায় উড়ে যায় হংস বলাকার সারি।
তার নিচে বাঁকা নদীর তীর ধরে ছোটে রেলগাড়ি।
যেন খাপে ঢাকা বাঁকা তলোয়ার। 
তুমি এবার নিজে এসে দেখে যাও,
 আমার যৌবনের উপবন,বার্ধক্যের বারাণসী,হৃদয়ের শরৎপল্লী।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ