এবছর মায়ের আবাহনের ক'দিন পর-
ছুটির অবকাশে মাত্র আট ঘন্টার জার্নি ছিল ওটা।
আগরতলা থেকে শিলচর-
আমার পুরোনো হোমটাউন থেকে বৌয়ের দিদির বাড়ী;
হাল্কা ফুর্তিতে ছিলনা গম্ভীর কিছু ভাবনার সম্ভাবনা।
নামে স্লিপার ক্লাস যদিও-
দিনে দিনেই যাত্রার শুরু ও শেষ দুটোই;
তাই সীটে বসেই চলছিল কিছু সাধারণ আলাপচারিতা।
এরই মাঝে দূরের সীটে বসে বই খুলে পড়ছে মেয়েটা-
বোঝা যাচ্ছে এস এস সি'-র কোন গাইড-বুক;
সিরিয়াস! নিশ্চয় সামনে ভবিষ্যৎ তৈরীর বড় পরীক্ষা।
হঠাৎ আমার শান্ত ব্রেনে দ্রুম দ্রুম লাগামহীন ড্রামশট!
ও কি টেট পাশ করে শিক্ষিকা হতে চাওয়া কোন মেয়ে?
আচ্ছা, এ মেয়ের পরীক্ষাকেন্দ্রটা ঠিক কোথায়?
সে কি শিলচর ছাড়িয়ে আরো বহুদূরে?
অন্য এক বৃহত্তর কোন নগরীতে! হয়তো কলকাতায়ই!
ফ্লাইটে যাবার ক্ষমতা নেই, তাই আসাম ঘুরে ট্রেনে
বদরপুর জংশনে নেমে হাওড়ার অন্য গাড়ী ধরবে!
পৌঁছতে দু'দিনে বার চারেক ভীষণ খিদে পাবে নিশ্চয়!
পাশেই ওর মায়ের কাছে ঐতো দেখছি ছাতুর ছোট্ট পুটুলি।
হয়তো টুকরো গুড় কামড়ে কামড়ে তাই মুখে পুরতে হবে।
কিন্তু ওখানে পার্থ-অর্পিতা আর সাকরেদ যারা আছে
তাদের লালসা মেটানোর রসদ ওরা সাথে রাখেনি নিশ্চয়!
অন্ততঃ ভাবভঙ্গীতে তার কোন লক্ষণই তো নেই!
পুটুলির পুরনো কাগজে ঐ দেখো অর্পিতার ছবি।
দেখা যাচ্ছে রাশি রাশি কড়কড়ে নোটের বাণ্ডিলও।
আচ্ছা, যোগ্য হয়েও বঞ্চিত হ'লে মেয়েটি কি করবে?
প্রাপ্য অধিকার পেতে হন্যে হয়ে ধর্মতলায় পথে বসবে?
নাকি মেয়েটিকেও আরেক অর্পিতা বানাবার লক্ষ্যে
হয়তো কেষ্ট আর পার্থরাই তাকে টেনে নেবে সেই পথে!
মেয়েটি যখন মন্ত্রীদের দ্বারে দ্বারে হত্যে দেবে কোনদিন,
হয়রান হয়ে শেষে বসে পড়বে কোন এক বেদীর নীচে-
কোন 'দামী' কেষ্টর 'নিরীহ' চেলা কি তাকে চালান দেবে
পার্থদেরই কোন এক ম্যাজিক রিসোর্টে- সরাসরি-
আরো খুব প্রভাবশালী কারো গোপন স্নেহচ্ছায়ায়?
হায়! আজ জার্নির নিরিবিলি উপভোগ সব মাঠে মারা-
এইসব মেয়েদের অজানা ভবিষ্যৎই আজ বারবার
জানিনা কেন আমাকে শুধু পরপর তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে।
0 মন্তব্যসমূহ