ad

মাসিক ই-পত্রিকা ‘উৎস’ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে(বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন)।
অনুগ্রহ করে পত্রিকার ইমেলে আর লেখা/ছবি পাঠাবেন না।

খালের ধার দিয়ে -প্রতীক মিত্র

 খালের ধার দিয়ে যখনই যাই এতটা দুরে চাকরির ক্লান্তিটা চলে যায়।  কারণটা খোঁজার অনেক চেষ্টা করেছি। পাইনি।ঘড়ির ক্রীতদাস হয়ে এত দৌড়ঝাঁপ...বাড়ি থেকে বেরোতে এক একদিন ইচ্ছেই করে না। তারপর যদি বা বেরিয়ে পড়িও একটা সময়ের পর আর কর্মস্থলে পৌঁছতে মন চায় না।কিন্তু সেই আমিই যখন স্টেশন থেকে সাইকেল চালিয়ে খালটার সামনে দিয়ে যাই,খারাপ লাগাটা আর থাকে না।খালটা এমন কিছু আহামরি নয়।খাল যেমন হয় তেমনই।জল সেখানে কম এবং বইছে উদাসীনভাবে। দু’পাড়ে তার দৃশ্যপট এমন কিছু আহামরি নয়। এপাড় থেকে ওপাড় কিম্বা ওপাড় থেকে এপাড়…যেদিক থেকে যেদিকে চাই,প্রকৃতি থাকে তার ঢলঢলে আলসেমি নিয়ে।ক’টা গাছ,গাছে কিছু ফুল, খাল দিয়ে হাওয়া বয়ে গেলে সে হাওয়ায় দোল খায় সেই সব ফুল।আকাশ পরিস্কার থাকলে নীল,মেঘ থাকলে ছাই রঙের।দুরে ধনুকের মত বাঁকানো কাঠের সাঁকো।এই খাল তার আশপাশের এইসব দৃশ্যাবলী খুব চেনা খুবই আপন। কিন্তু কোনো কিছু চেনা হলেই আপন হবে এমন নয়।চেনা হলেই যে ভালো লাগবে এমন তো মোটেই নয়।তা যদি হত অ্যাদ্দিনের চেনা অফিসটা প্রথমেই ভালো লাগতো।যাজ্ঞে ব্যাখ্যা এক্ষেত্রেও খুঁজেছি,পাইনি।স্টেশনে নেমে এক একদিন সাইকেলটা আর চালাতে ইচ্ছে করে না।মনে হয় ওখানেই থেকে যাই,ওই স্যাঁতস্যাঁতে সাইকেল গ্যারাজের অন্ধকারে,চিরতরে।সামনের রাস্তাটা যেন আমার শত্রু।খিল্লি ওড়াতে তৈরি সবসময়। আমায় ক্লান্ত দেখিয়ে কি যে তার ভাল লাগা?তবু রাস্তায় আমি রওনা দিই।সাইকেল আমার গড়াতে থাকে। পায়ে এগারো বছরের চাকরির ভার,মাথায় চিন্তা অগুন্তি ঘরের,বাইরের…সেই নিয়েই অতি কষ্টে ঘষটে ঘষটে ঘ্যানঘ্যানে সাইকেল চড়ে ক্লান্তিকে বয়ে খালের কাছে পৌঁছনোর পর দুরে চাকরির এই ক্লান্তিটা নিমেষে হাওয়া হয়ে যায়।কারণটা খোঁজার অনেক চেষ্টা করেছি।পাইনি।কখন যে সে এতটা আপন হয়ে গেল জানতেই পারলাম না।কারণ খোঁজাটা বোধ হয় বৃথা।কিছু জিনিস যুক্তির ঊর্ণাজালের বাইরে থাকে।এটাও বোধ হয় তেমনই কিছু। থাক না!ব্যাখ্যায় না  হয় নাই গেলাম।



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ