এ পরিস্তিতিতে এর আগেও ও পরেছে। বেরিয়েও গিয়েছে সেখান থেকে অনায়াসে
সোমনাথ...প্রত্যেকবারই। এইবার যে কী হল! স্বেচ্ছায়
ঢুকে পরলো। খিদে ওর ততটা পায়নি যে একেবারে দু-দু’খানা কেক তাও ওই
বাপুজি কিনে নিতে হবে। তবু কিনলো, ওই ট্রেনের মেঝেতে বসা
ধুলোমাখা মহিলাটার সাথে বাচ্চা দুটোকে দেখে কিনেই ফেললো দুটো কেক। বাচ্চাগুলো
যেভাবে উত্যক্ত করছিল মহিলাটিকে ট্রেনে হকার কোনো খাওয়া নিয়ে উঠলেই যে বোঝায়
যাচ্ছিল ওদের বেশ খিদে পেয়েছে। অন্য সময় এই বলে এইসব দেশ
হিতৈষীপনার থেকে পাশ কাটায় যে অন্যদের দায়িত্ব তার নয়, রাষ্ট্রের। সে খুব বেশি হলে তার
নিজের মেয়েটার দায়িত্ব নিতে পারে। তবু, সোমনাথ এবারে কেকটা শুধু কিনলই না, একটা ওই বাচ্চাগুলোকে দিতেও গেল। ওর নিজের মেয়ের কথাটা মনে
পড়ে গেল বাচ্চাগুলোকে দেখে। মেয়েটার শরীরটা ক’দিন ধরে
খারাপ যাচ্ছে। তার জন্য ডাক্তার, ওষুধ-পথ্য সবই চলছে। সোমনাথের মাথায় আসছিল ওর মা, পিসি
যে কথাগুলো বলেছিল। অন্যদের উপকার করলে উপরওয়ালার থেকে যদি আশীর্বাদ
মেলে। এইসব হাস্যকর ব্যাপার সোমনাথ কোনোদিনই মানতো না। আজকাল তবু
যে কেন এইসব বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করছে। যদি বাচ্চাগুলোকে খাওয়ালে মেয়েটার শরীরটা
ভালো হয়ে যায়। অপত্য স্নেহে মানুষ কত যে কী করে! ওই ভিখিরি মহিলাও না জানি কত কী করেছে! এখন তবে কেন করলো না? সোমনাথের দেওয়া কেকটা কেন ফিরিয়ে দিল? কীভাবে ফিরিয়ে দিল? তখন অবশ্য সোমনাথের কী প্রতিক্রিয়া দেওয়া উচিৎ সোমনাথ
জানতো না! মুখটা ছুটতে থাকা ট্রেনের জানলা দিয়ে বাইরে চেয়ে রইলো সে।
0 মন্তব্যসমূহ