ad

মাসিক ই-পত্রিকা ‘উৎস’ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে(বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন)।
অনুগ্রহ করে পত্রিকার ইমেলে আর লেখা/ছবি পাঠাবেন না।

পুস্তক পর্যালোচনা: যখন হস্তলিপি বলে দেয় মনের খবর – হরফ, পারমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়

  • বই - হরফ
  • লেখকরূপক সাহা
  • প্রকাশনী-আনন্দ
  • পৃষ্ঠা-২৭৩
  • প্রকাশকাল জানুয়ারি ২০০৫ 
  • প্রচ্ছদ -  অনুপ রায়

 

অক্ষরবিদ্যা বা গ্রাফোলজিএমন এক বিষয় যার সাহায্যে একজন মানুষের হস্তলিপি বিশ্লেষণ করে তাঁর চরিত্র, মানসিক ভাবধারা, চিন্তাভাবনার গতিপ্রকৃতি প্রভৃতি সম্পর্কে সব কিছু জানা যায় একজন মানুষের মনস্তাত্বিক স্থিতি মূল্যায়ন করা যায়; এবং এই বিশ্লেষণের ওপর নির্ভর করে হাতের লেখা পরিবর্তনের মাধ্যমে একজন মানুষের চারিত্রিক ও মানসিক বৈশিষ্ট পরিবর্তন করে দেওয়া যায় এই প্রক্রিয়াকে গ্রাফোথেরাপি বলেআকারবিজ্ঞাননামে প্রচারিত  গ্রাফোলজিস্টদের এই দাবী অবশ্যি বৈজ্ঞানিক মহলে এখনও অনুমোদিত বা সমাদৃত হয়নি আদৌ এই বিশ্লেষণের কোনো ভিত্তি আছে কিনা তাও প্রমাণ সাপেক্ষ

এই বিষয় নিয়েই রূপক সাহার উপন্যাসহরফ গ্রাফোলজি নিয়ে গবেষণারত উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র অভিমন্যু বা অভি বহরমপুরের ছেলে- এই বিষয়ে গভীর জ্ঞান অর্জনের উদ্দেশ্যে কলকাতায় এসে আস্তানা গেড়েছে সে সঙ্গী কেয়ারটেকার গবাদা ও তাঁর বউ বিভিন্ন বয়সী ও সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের হাতের লেখা বিশ্লেষণ করে সে তাঁদের চরিত্র ও মানসিক অবস্থার কথা অকপটে জানিয়ে দেয় প্রয়োজনে গ্রাফোথেরাপি করে তাঁদের জীবন সহজ সরল ও  সুস্থ করে তোলে আপাতনিরীহ ও পড়াশোনায় ব্যস্ত অভির সহজ সরল জীবনে ঝড় ওঠে যখন স্থানীয় গুন্ডার দলকে সে একা হাতে পিটিয়ে শহরের অন্যতম বিখ্যাত বিচারক ও তাঁর একমাত্র মেয়েকে রক্ষা করে এই ঘটনা তাকে রাতারাতি জনপ্রিয় মানুষ করে তোলে গুণ্ডাদের আশ্রয়দাতা রাজনৈতিক দলের নজরেও পড়ে যায় সে রাজনৈতিক চাপ ও গুন্ডাদমনের ফলে অন্ধকার জগতের চক্ষুশূল হয়ে অভির জীবনে যখন আলোড়ন তৈরি হচ্ছে, ঠিক সেই সময়ে তাঁর জীবনে সঞ্জনার প্রবেশ বহরমপুরে ছোট থেকে একসাথে মানুষ হওয়া সঞ্জনাকে নিজের বাড়িতে কাছ থেকে দেখে গভীর প্রেমের উৎসারণ কালের গতিতে এই প্রেম যখন বিয়ের মণ্ডপে পৌঁছায় তখনই সঞ্জনার লেখা এক চিঠি অভির হাতে এসে পড়ে চিঠির হাতের লেখা ও হস্তাক্ষর বিশ্লেষণ করে অভি গভীর দ্বন্দ্বের ঘূর্ণিপাকে আবদ্ধ হতে থাকে কারণ হস্তলিপি বিশ্লেষণ অনুযায়ী লেখিকা চারিত্রিকভাবে স্খলিতা, বহুসঙ্গীতে অভ্যস্ত এরপর কি হবে? অভি ও সঞ্জনার কি বিয়ে হবে? গুণ্ডাদল ও রাজনৈতিক নেতাদের কবল থেকে কি অভির রেহাই হবে? এর সাথে আরও কিছু চরিত্র যেমন দিলু, বুলি, মিলি, টিপু, রিয়া, শান্তনুএদের জীবনেই বা অভিমন্যুর কী প্রভাব থাকবে?

হালকা উপাদানে ভরপুর হালকা রসের বই যারা পছন্দ করেন তাঁদের জন্য সময় কাটানোর উপযুক্ত বই যদিও গ্রাফোলজির সাথে অনর্থক রাজনৈতিক নেতা ও স্থানীয় গুণ্ডাদের সংযোগ ঘটানোর কোনো যুক্তি খুঁজে পাওয়া যায়না অনায়াসেই এই পর্ব বাদ দেওয়া যেত জীবনের বহুবিধ জটিলতা যোগ করলে বরং অনেক বেশে মনোগ্রাহী হয়ে উঠত এই বই কিন্তু অকারণ একটি উদ্বেগ পাঠকের মাথায় ঢুকিয়ে দিয়ে শুধুই পৃষ্ঠাসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে আর অনাবশ্যক এই গুন্ডাপর্বের প্যাঁচাল বিরক্তি বাড়িয়েছে মাঝে মাঝেই অতিরিক্ত অপ্রয়োজনীয় কথা বই পড়ার আগ্রহে ব্যাঘাত ঘটায় একবারও মাথা না খাটিয়ে পড়ার মত বই

লেখক পরিচিতিঃ

আনন্দবাজার পত্রিকায় ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক রূপে যোগদান করে, পরবর্তী কালে এই পত্রিকার খেলার বিভাগের সঙ্গে যুক্ত হন খেলার জগতে নিয়মিত সাংবাদিক রূপে যুক্ত থাকাকালীন আনন্দবাজার পত্রিকার খেলার বিভাগের সম্পাদক নিযুক্ত হন ১২ বছর এই পদে থাকার পর চলচ্চিত্রবিষয়ক পত্রিকাআনন্দলোক”-এর সাথে যুক্ত হন ২০০৪ সালে আনন্দলোক পত্রিকার সম্পাদক রূপে যোগদান করেন বর্তমানেসকালবেলাপত্রিকার সম্পাদকের ভূমিকায় কর্মরত

রূপক সাহা

তাঁর প্রথম লিখিতজুয়াড়িগল্পটি আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত হয় এরপরেলাল রঙের পৃথিবীউপন্যাসটি আনন্দবাজারে প্রকাশিত হওয়ার পর অত্যন্ত জনপ্রিয় হয় লেখক রূপে রূপক সাহা প্রতিষ্ঠা লাভ করেন এছাড়া তাঁর লেখা জীবাণু, হিয়া, রক্তবীজ, ক্ষমা কর হে প্রভু, তরিতা পুরাণ, সাদা পাতায় কালো দাগ, ঘাতক প্রভৃতিও পাঠকমহলে সমাদৃত হয়






একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

1 মন্তব্যসমূহ

  1. "হরফ" এর সুন্দর আলোচনা উপহার দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
    রুপক সাহা আমাদের গর্ব।
    অনেক অনেক শুভেচ্ছা ।

    উত্তরমুছুন